পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি খাল মেরামত করার সময় বিশাল কাদামাটির ধসে ৭ স্বেচ্ছাসেবক নিহত হয়েছেন। সোমবার (১১ আগস্ট) ভোরে এ দুর্ঘটনায় আরও তিন জন আহত হয়েছেন।কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গিলগিট-বালতিস্তানের দানিয়র শহরে ভূমিধসের পর মৃতদেহ উদ্ধার এবং আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।অঞ্চলটিতে হিমবাহের হ্রদে আকস্মিক বন্যার ফলে সম্প্রতি পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে যান চলাচল ও বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। মেরামত শুরু করার জন্য ভারী যন্ত্রপাতিসহ ইঞ্জিনিয়ার এবং কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি মহাসড়কের কাছে বেশ কয়েকটি ভূমিধসের ফলে দানিয়র এবং আশেপাশের এলাকায় ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রধান হাসান আলী বলেছেন, বাস্তুচ্যুতদের প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।সোমবার এক বিবৃতিতে এই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী গুলবার খান নিহত ৭ জনকে 'সম্প্রদায়ের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গকারী বীর' বলে অভিহিত করেছেন।গিলগিট-বালতিস্তান মনোরম হিমবাহের জন্য পরিচিত অঞ্চল। এটি দেশটির সঞ্চিত পানি সরবরাহের ৭৫ শতাংশের উৎস। গত মাসে এই অঞ্চলে ভূমিধসে ১৮ জন পর্যটক নিহত হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমবাহ হঠাৎ পানি ছেড়ে দিলে হ্রদের আকস্মিক বন্যা হয়। প্রায়শই বরফ বা ধ্বংসাবশেষের বাধা ভেঙে যাওয়ার কারণে মানি ছড়িয়ে পরে।বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা পাকিস্তানের উত্তর পর্বতমালায় হিমবাহ গলানোর গতি ত্বরান্বিত করছে। বরফ গলার ফলে এই হ্রদের আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে।বিজ্ঞানীদের একটি নেটওয়ার্ক ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২৪ জুন থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে বৃষ্টিপাত ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি হয়েছে। বিশ্বের গ্রিনহাউস গ্যাসের ১ শতাংশেরও কম উৎপাদন করে পাকিস্তান, তবে গবেষণায় দেখা গেছে, চরম আবহাওয়ার কারণে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।